খেলাধূলা ডেক্সঃ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে তিন ম্যাচ ওডিআই সিরিজের শেষ ম্যাচে ১৭৯ রানের বড় জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
এই জয়ে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে টানা সিরিজ হারের ধারাবাহিকতা থেকে বের হলো টাইগাররা। টানা চারটি সিরিজ হারার পর প্রথম সিরিজ জিতল বাংলাদেশ, প্রথম সিরিজ জিতল ১৯ মাস পর। এবারের আগে সর্বশেষ ২০২৪ সালে মার্চে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। ২৯৭ রানের জবাবে এ দিন সফরকারীদের প্রয়োজন ছিল একটি ভালো শুরুর। তবে সেই স্বপ্নে জল ঢেলে দেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। ম্যাচের পঞ্চম ওভারেই তিনি এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ওপেনার এথানেজকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান। উইন্ডিজের সংগ্রহ তখন ১৬ রান।
পরের ওভারে আবারও নাসুমের আঘাত। এবার তার শিকার হন আকিম আগুস্তে। শুরুতে আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটটি তুলে নেন নাসুম। এর মধ্য দিয়ে সফরকারী শিবিরে বড় ধাক্কা দেন তিনি। তবে নাসুমের আসল ঝলক দেখা যায় উইন্ডিজের স্কোর ৩৫ ছুঁতেই। ইনিংসের শুরু থেকে সাবধানে খেলতে থাকা ব্রেন্ডন কিংকে বোল্ড করে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তিনি।
দলীয় ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর আর ব্যাট হাতে দাঁড়াতেই পারল না উইন্ডিজ। স্কোরবোর্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান যখন ৬৭, তখন সাজঘরে ফিরে গেলেন ৭ ব্যাটার। এমন ব্যাটিং বিপর্যয় থেকে শেষ পর্যন্ত টেনেটুনে অলআউট হওয়ার আগে ১১৭ রান সংগ্রহ করে ক্যারিবিয়ানরা। এতে করে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ম্যাচে ১৭৯ রানের বিশাল জয় নিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে মেহেদী মিরাজের দল।
বল হাতে বাংলাদেশর হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন, ২টি করে উইকেট নেন তানভীর ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। এর আগে, টস জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের হয়ে এ দিন ব্যাট হাতে ইনিংস শুরু করেন সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার। দুই ওপেনারের ব্যাটে ভালো শুরু পেয়ে যায় টাইগাররা। তাদের দারুণ ব্যাটিংয়ে বড় রানের পথেই ছিল বাংলাদেশ।
মিরপুরের মাঠে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে যেখানে রান পাওয়া ছিল কষ্টকর, সেখানে আজকের ম্যাচে ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারেই চলে আসে ৭৪ রান। পাওয়ার প্লে শেষ হলেও আরও মারকুটে স্বভাবে ব্যাট চালাতে থাকেন দুই টাইগার ওপেনার। তাদের মারকুটে ব্যাটিংয়ের সুবাধে দুজনেই পেয়ে যান ফিফটির দেখা। ফিফটি পাওয়ার পর সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন দুই ব্যাটার। দলীয় ১৭৬ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৮০ রানে ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন সাইফ হাসান। সাইফ ফেরার কিছুক্ষণ পর দলীয় ১৮১ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৯১ রানের মাথায় বড় শট খেলতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার।
একটা সময় ইনিংসের ২২ ওভারে বাংলাদেশের রান ছিল কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৬০ রান, তখন মনে হয়েছিল বাংলাদেশর রান সহজেই পেড়িয়ে যাবে ৩৫০-এর ওপরে। কিন্তু না, তা হলো না। দুই ওপেনারের বিদায়ে নিজেদের পুরোনো স্বভাবে ফিরে আসে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের রান যখন ২৬১, তখন সাজঘরে চলে গেছেন ৭ ব্যাটার এবং ওভার সংখ্যা ৪৬।
শেষদিকে বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী মিরাজ ও নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৬ রান করে টাইগাররা। ব্যাট হাতে বাংলাদেশের হয়ে ৭২ বলে ৮০ রান করেন সাইফ হাসান, ৮৬ বলে ৯১ রান করেন সৌম্য সরকার, ৫৫ বলে ৪৪ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।##










