জয়নাল আবেদীনঃ ময়মনসিংহের গৌরীপুর সরকারি কলেজে জমিদার আমলের প্রাচীন স্থাপনা (পাকাভবন) ভেঙে পাঠদান ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর ওই স্থাপনাটির উপরিভাগ ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে স্থাপনাটি ভেঙে ফেলার পরিবর্তে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার ভবনটি সরেজমিন পরিদর্শন করতে প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর থেকে একটি টিম শুক্রবার গৌরীপুর অাসছে বলে জানা গেছে৷ এ বিষয়ে গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম মিন্টু জানান, প্রাচীন স্থাপনাটি কলেজের ছাত্র সংসদের কার্যালয় ও পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের কমন রুম হিসেবে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু ভবন নির্মাণের অজুহাতে স্থাপনাটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। জানা গেছে, ১৯৬৪ সালের ১ আগস্ট গৌরীপুর পৌর শহরের কৃষ্ণপুর এলাকায় জমিদার সুরেন্দ্র প্রসাদ লাহিড়ীর বাড়িতে গৌরীপুর সরকারি কলেজের যাত্রা শুরু হয়। ২২ একর জমির উপর গড়ে উঠে দৃষ্টিনন্দন কলেজটি। প্রাচীন নিদর্শন, সুপ্রশস্ত মনোরম ক্যাম্পাস ও প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠটি ক্রমেই দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়।১৯৯১ সালে কলেজটি সরকারিকরণ হয়। ২০১২ সালে কলেজে অনার্স কোর্স চালু হয়। এ অবস্থায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে গেলে দেখা দেয়ে ভবন সংকট। সম্প্রতি কলেজে ভবন নির্মাণের জন্য একটি প্রাচীন স্থাপনা ভাঙার কাজ শুরু হয়। গতকাল বুধবার থেকে স্থাপনা ভাঙার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে। কলেজে বিকল্প জায়গা থাকার পরেও কেন প্রাচীন নিদর্শন ভেঙে ভবন নির্মাণ হচ্ছে সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেন বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষ।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের অধ্যক্ষ ভবনের পাশে প্রাচীন স্থাপনাটি ভাঙার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে একতলা ছাদবিশিষ্ট স্থাপনাটির উপরিভাগ ভেঙে ফেলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি অংশ ভাঙা হবে বলে জানান নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা।গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন জুয়েল বলেন, ‘একাধিক ভবন নির্মাণের জন্য গৌরীপুর সরকারি কলেজের নিজস্ব অনেক জমি খালি পড়ে রয়েছে। আমাদের দাবি ওইসব খালি জমিতে ভবন নির্মাণ করা হোক। পাশাপাশি ঐতিহাসিক নিদর্শনটি না ভেঙে এর অবকাঠামো ঠিক রেখে দৃষ্টিনন্দন ভাবে সংস্কার করা হোক।’মানবাধিকার কমিশন গৌরীপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক রইছ উদ্দিন জানান, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, অপরিকল্পিত সংস্কার ও নির্মাণ কাজের জন্য কলেজের প্রাচীন নিদর্শনগুলো ধ্বংস হচ্ছে। কয়েক বছর আগে সংস্কারের নামে কলেজের প্রবেশ পথে প্রাচীন ভবনের উপরিভাগের একাংশ ভেঙে ফেলা হয়। পরবর্তীতে সেটি আর মেরামত হয়নি। এখন আরেকটি প্রাচীন স্থাপনা ভাঙা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে কলেজের প্রাচীন নিদর্শনগুলোর আর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।এ বিষয়ে গৌরীপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর মিল্টন ভট্টাচার্য জানান, প্রাচীন স্থাপনাটির অবকাঠামো দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এটি সংস্কার করে সংরক্ষণের সুযোগ নেই। স্থাপনাটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত পড়েছিল। তাই ভবন নির্মাণের জন্য যথাযথ নিয়ম মেনে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় এটি ভাঙা হচ্ছে। তবে কলেজের যে সকল প্রাচীন নিদর্শন সংস্কার করার সুযোগ রয়েছে সেগুলো সংস্কার করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
এ প্রাচীন ভবনটি পুনরায় সংস্কার কাজের জন্য নতুন করে টেন্ডার দেওয়া হউক
রাজ গৌরীপুরের ঐতিয্য আমরা বিলীন হতে দেবনা গৌরীপুরের প্রত্যাকটি ভবন সংস্কার করা হউক একটা ভবনও না ভাঙ্গা হয়
এটা আামার অনুরোধ মাত্র