রাজগৌরীপুর ডেক্সঃ ময়মনসিংহের গৌরীপুর সরকারি কলেজে প্রাচীন স্থাপনা (পাকাভবন) ভাঙ্গা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জুলাই) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রতিনিধিদের একটি টিম ওই প্রাচীন স্থাপনা পরিদর্শন করেছে।
গৌরীপুর সরকারি কলেজের প্রাচীন স্থাপনা ভেঙ্গে পাঠদান ভবন নির্মণের খবরটি সাপ্তাহিক রাজগৌরীপুর , রাজগৌরীপুর ডট কম সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে বাংলাদেশ প্রতœতত্ত¡ বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক (ঢাকা বিভাগ) রাখী রায় গৌরীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রাচীন স্থাপনা ভাঙ্গা বন্ধ রাখার জন্য বলেন। শুক্রবার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রতিনিধি ময়মনসিংহ শশীলজ জাদুঘরের ফিল্ড অফিসার সাবিনা ইয়াসমিনের নেতুত্বে একটি দল ওই প্রাচীন স্থাপনা পরিদর্শন করেন।
ফিল্ড অফিসার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, স্থাপনাটি তারা পরিদর্শন করেছেন। রিপোর্ট ঢাকায় পাঠাবেন। সেখান থেকে কি করার সে নির্দেশনা আসবে। এছাড়া তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে দেখা করে স্থাপনা ভাঙ্গার কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন।
উল্লেখ্য গৌরীপুর সরকারি কলেজের প্রাচীন স্থাপনা ভেঙ্গে পাঠদান ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর ওই স্থাপনাটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়। তবে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসাবে জমিদার আমলের এই স্থাপনাটি ভেঙে ফেলার পরিবর্তে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি উঠে।
১৯৬৪ সালের ১লা আগস্ট গৌরীপুর পৌর শহরের কৃষ্ণপুর এলাকায় জমিদার সুরেন্দ্র প্রসাদ লাহিড়ীর দৃষ্টিনন্দন বাড়িতে স্থাপিত হয় গৌরীপুর সরকারি কলেজ। কলেজটিতে রয়েছে ২২একর সম্পত্তি। দৃষ্টিনন্দন বাড়িটিতে স্থাপিত কলেজটি প্রাচীণ নির্দশন, সুপ্রশস্ত মনোরম ক্যাম্পাস ও প্রাকৃতি পরিবেশের কারণে ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠটি ক্রমেই দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়।
১৯৯১ সালে কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। ২০১২ সালে কলেজে অর্নাস কোর্স চালু হয়। এই অবস্থায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে গেলে দেখা দেয়ে ভবন সংকট। সম্প্রতি কলেজে ভবন নির্মাণের জন্য জমিদার সুরেন্দ্র প্রসাদ লাহিড়ীর দৃষ্টিনন্দন বাড়ির দরবারখানা হিসেবে ব্যবহৃত প্রাচীন স্থাপনা ভাঙার কাজ শুরু হয়। পরে স্থাপনা ভাঙার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে। কলেজে বিকল্প জায়গা থাকার পরেও কেন প্রাচীন নির্দশন ভেঙে ভবন নির্মাণ হচ্ছে সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেন বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষ।
বুধবার থেকে অধ্যক্ষ ভবনের পাশে প্রাচীন স্থাপনাটি ভাঙার কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যে একতলা ছাদবিশিষ্ট স্থাপনাটির বেশ কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি অংশ ভাঙা হবে বলে নির্মাণ কাজের শ্রমিকরা জানায়।
এ বিষয়ে গৌরীপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর মিল্টন ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, স্থাপনাটির অবকাঠামো দুর্বল ও ঝুঁকিপুর্ণ হওয়ায় এটি সংস্কার করে সংরক্ষণের সুযোগ নেই। স্থাপনাটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত পড়ে ছিলো। তাই ভবন নির্মাণের জন্য যথাযথ নিয়ম মেনে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় এটি ভাঙা হচ্ছে। তবে কলেজের যে সকল প্রাচীন নির্দশন সংস্কার করার সুযোগ রয়েছে সেগুলো আমরা সংস্কার করে সংরক্ষণ করছি।