রাজশাহী: রাজশাহী রেলওয়ে অফিসার্স মেসের সামনের ড্রেনে টাকা ভেসে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে! প্রথমদিকে ভাবা হচ্ছিল কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ট্রেনে ভেসে যাচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে- খুব সামান্য পরিমাণ টাকায়ই পুরোনো কাগজের সঙ্গে ফেলে দেওয়া হয়েছিল ড্রেনের মধ্যে।
সেই টাকা যখন ড্রেনের পচা পানিতে ভাসছিল তখন নিম্ন আয়ের উৎসুক মানুষ ড্রেনে নেমে পড়েছিলেন টাকা কুড়ানোর জন্য। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে।
জানা গেছে, ওই টাকাগুলো রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের। সেগুলো স্টোরে থাকা পুরোনো কাগজপত্রের ভেতর ছিল।
মহানগরের শিরোইল এলাকায় সড়ক পরিবহন গ্রুপের কার্যালয়ের পাশেই রেলওয়ে অফিসার্স মেসের সামনের ড্রেনে দুপুরে সড়ক পরিবহন গ্রুপের লোকজন কাগজের সঙ্গে খেয়াল না করে টাকাগুলোও ফেলে দেন। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে- এগুলো দুর্নীতি করে জমানো টাকা।
তাই ভয়ে ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ খবরে তুলকালাম শুরু হলে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ড্রেনের কাছে যান। পরে তারা টাকার রহস্য খুঁজে পান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ড্রেনে ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ৫০০ ও এক হাজার টাকার নোট পাওয়া গেছে। টাকা ভাসতে দেখে প্রথমে একজন ও পরে অনেক মানুষ নেমে পড়েন ড্রেনে।
তাদের মধ্যে প্রথমে ড্রেনে নামেছিলেন- টুলু নামের এক ভাঙ্গারি বিক্রেতা।
তিনি জানান, টাকাগুলো অফিসার্স মেসের সামনের ড্রেনের পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে চলে যাচ্ছিল। ড্রেনে ভাসতে দেখে তিনি নেমে পড়েন।
আসলাম নামে অপরজন জানান, তিনি এক হাজার ও ৫০০ টাকার নোট পেয়েছেন।
এছাড়া ড্রেনের মধ্যে টাকা ভেসে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন সেখানে গিয়ে ভিড় করেন। এদের মধ্যে অনেকে আবার ড্রেনের নেমেও পড়েন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সৌভাগ্য বসত ১০০ ও ৫০০ টাকার নোটও পেয়েছেন।
মহানগরের বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মন বাংলানিউজকে জানান, ড্রেনে টাকা ভেসে যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে পুলিশ কর্মকর্তারা টাকাগুলো কোথায় থেকে এসেছে সে ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা নিশ্চিত হন যে ড্রেনে ভাসতে থাকা ওই টাকাগুলো পুরোনো কাগজের সঙ্গে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের অফিস থেকেই ফেলা হয়েছে।
এদিকে, রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনায় তারা খুবই বিব্রত হয়েছেন। ২০১০ সালের কিছু পুরোনো কাগজপত্র স্টোরে ছিল। বৃষ্টির পানি ঢুকে সেগুলো প্রায় পচেই গিয়েছিল। যে কারণে কাগজগুলো পোড়ানো সম্ভব হয়নি। আজ অফিসের লোকজন সেই পুরনো কাগজগুলো পাশের ড্রেনে ফেলে দেন। এর মধ্যে যে কিছু টাকা থাকতে পারে তা কারো ধারণাই ছিল না।
এর কিছুক্ষণ পর ড্রেনে টাকা ভাসতে থাকার খবর ছড়িয়ে পড়লে তারাও ঘটনাস্থলে যান এবং এ বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হন। সেখানে কাগজের সঙ্গে খুব বেশি হলে দুই থেকে তিনি হাজার টাকা থাকতে পারে। অথচ প্রথমে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে লাখ লাখ টাকা ভাসছে। তবে কিছুক্ষণ পর যখন খোঁজাখুঁজি করে আর বেশি টাকা পাওয়া যায়নি। তখন উৎসুক মানুষজন ড্রেনের পানি থেকে উঠে পড়ে বলেও জানান শ্রমিক নেতা টিটো।