ষ্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু বলেছেন, ‘শুভ্র’র হত্যাকারীরা এক চুলও ছাড় পাবে না,হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। সে বঙ্গবন্ধু’র আদর্শের একজন সৈনিক ছিল, আমাদের ভাই। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য আগামী মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্রুত বিচার সংক্রান্ত মামলার যে বৈঠক হবে সে বৈঠকে এই মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিআরডিবির চেয়ারম্যান ও মেয়র প্রার্থী মাসুদুর রহমান শুভ্র হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবারকে শান্তনা দেয়ার সময় এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। তিনি আরো বলেন, আমরা সরকারে থাকাবস্থায় আমাদের লোককে মেরে ফেলবে, সেটা আমাদের কল্পনাতীত। এ ক্ষতি বঙ্গবন্ধু’র, এ ক্ষতি শেখ হাসিনার! শুভ্র হত্যাকান্ডের মামলার জন্য যা কিছু করতে হয় সবকিছুই আমরা করবো। দ্রুত যেন রায় হয় সেই ব্যবস্থাও আমরা করবো।
সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে একেএম আফজালুর রহমান বাবু বলেন, এ ঘটনাটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অবগত আছেন। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তোমরা যাও, পরিবারকে শান্তনা দিয়ে আসো। যা করতে হয়, আমরা সব করবো।
তিনি আরো বলেন,দুসময়ে শুভ্র’র বাড়ি আওয়ামী লীগের অফিস ছিল, এখানে বঙ্গবন্ধু এসেছেন। এ বাড়ি থেকে বারবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গ্রেফতার হয়েছেন। দুঃসময়ে এ বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম পরিচালনা হয়েছে। এ পরিবারের তিন প্রজন্ম আওয়ামী লীগের।
কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নিকট শুভ্র’র স্ত্রী তাহমিনা আক্তার চুমকী আক্ষেপ করে বলেন, আমার স্বামী রাজনীতির জন্য বলি হয়েছে, স্বামী হত্যার বিচার চাই। আমার স্বামীর যে কারণে মৃত্যু হয়েছে, আমি তার সেই স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। আপনাদের সহযোগিতা চাই। আমার দু’টি সন্তান ছিলো। ওরাও মারা গেছে। আমি আমার স্বামীর স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। আমিও সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চাই, চাই আপনাদের সহযোগিতা। আমার স্বামীর হত্যাকারীরা যেন ক্ষমতার ফাঁক গলে বেড়িয়ে যেতে না পারে। নিহতের মা খালেদা বেগম বলেন, আমার এক ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এখন আরেক ছেলেও হুমকিতে রয়েছে, আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই। এ সময় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু নিহতের মায়ের মাথায় হাত রেখে নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। এ প্রসঙ্গে গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বোরহান উদ্দিন তাৎক্ষনিক প্রতিশ্রুতি দেন, নিহতের ছোট ভাই মামলার বাদী আবিদুর রহমান প্রান্ত ও তার পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ সবসময় সতর্ক রয়েছে।
অপরদিকে নাতি হত্যাকান্ডের বিচার নিয়ে কথা বলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে স্বাক্ষাৎ করার আকুতি জানান নিহত শুভ্র’র দাদু আয়শা আক্তার (তিনি ভাষাসৈনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডাঃ এম.এ সোবহানের স্ত্রী)। করোনাকালীন এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দিবেন বলেও জানান একেএম আফজালুর রহমান বাবু। এ সময় নিহতের বাবা ডাঃ সিদ্দিকুর রহমান বাবুল, নিহতের চাচা আসেকুর রহমান বাচ্চু, সাদেকুর রহমান, ফুফু মাজেদা বেগম মুক্তি ও মামলার বাদী নিহতের ছোট ভাই মোঃ আবিদুর রহমান প্রান্তও কথা বলেন।
শুভ্র হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তাৎক্ষণিক আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে স্বেচ্ছাসেবকলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা, আরিফুর রহমান টিটু, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন সম্পাদক মোস্তফা কামাল মনি, বাণিজ্য সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম সাদেক, গণযোগাযোগ সম্পাদক তানভীর আক্তার শিপার, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সাইদুর রহমান সিন্টু, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন কবীর, উপ দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য গোলাম রব্বানী, আবু জাফর, আজহারুল ইসলাম অপু, ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস, ময়মনসিংহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান খোকন, সাধারণ সম্পাদক উত্তম চক্রবর্তী রকেট, নেত্রকোণা জেলার স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মারুফ হাসান খান অভ্র, সাধারণ সম্পাদক খাইরুল হাসান লিটু অংশ নেন । বিকেলে গৌরীপুর পৌর কবরস্থানে সদ্য প্রয়াত শুভ্রর কবর জিয়ারত করেন নেতৃবৃন্দ। এসময় মরহুমের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় মোনাজাতে অংশগ্রহন করেন তারা।