ষ্টাফ রিপোর্টার;
ধানের মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চালের সংগ্রহ মূল্য পুননির্ধারণ না করলে সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ না হওয়ার কথা জানিয়েছেন দেশের চালকল মালিকরা। বুধবার (২৫ নভেম্বর) বিকালে বগুড়ায় এক সভা শেষে তারা তাদের ওই সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রশিদ। দেশের প্রায় ১৭ হাজার চালকল মালিকদের প্রতিনিধিত্বকারী ওই সংগঠনের নির্বাহী কমিটির সভায় সারাদেশ থেকে ৫০জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার শেষ দিন ২৬ নভেম্বরের একদিন আগে তারা ওই সভা করেন।
বুধবার বিকালে বগুড়ায় হোটেল রেড চিলিস-এ আয়োজিত ওই সভা শেষে সভার সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের বিস্তারিত তুলে ধরেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কে এম লায়েক আলী। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিপূর্বে চালের সংগ্রহ মূল্য বাড়ানোর একটি প্রস্তাব লিখিত আকারে সরকারের কাছে দিয়েছি। সেখানে আমরা দেখিয়েছি এক কেজি চাল উৎপাদনে আমাদের খরচ হয় ৪৩ টাকা ৬৩ পয়সা।’ তিনি বলেন, ‘যেখানে উৎপাদন খরচই বেশি সেখানে কম মূল্যে আমরা কিভাবে চাল দিতে পারি। তাই সরকারের কাছে আমরা ধানের মূল্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চালের মূল্য পুনর্র্নিধারণের দাবি জানিয়েছি। তা না করা পর্যন্ত আমাদের পক্ষে চুক্তিবদ্ধ হওয়া সম্ভব নয়।’
চালকল মালিকদের কাছ থেকে এবার সরকার ৩৭ টাকা কেজি দরে ৬ লাখ মেট্রিক টন চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৫ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংগ্রহ অভিযান চলার কথা। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে চালকল মালিকদেরকে খাদ্য বিভাগের সঙ্গে ২৬ নভেম্বরের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
চালকল মালিকদের ওই সভায় উপস্থিত সদস্যরা জানান, বাজারে বর্তমানে এক কেজি চাল ৪৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেখানে সরকার ৩৭ টাকায় চাল কেনার জন্য মিল মালিকদের চুক্তিবদ্ধ হতে বলছে- যা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। গেল বোরো মৌসুমে সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত মূল্যে চাল বিক্রি করে লোকসান দেওয়ার কথা জানিয়ে চালকল মালিকরা সভায় জানান, বোরো মৌসুমে সরকারের গুদামে চাল দিতে গিয়ে প্রতি কেজিতে তাদেরকে ২ থেকে ৩ টাকা লোকসান গুণতে হয়েছে।
সমিতির সদস্যরা জানান, বোরো মৌসুমে চালকল মালিকরা বর্তমান বাজারে ধানের মূল্য বৃদ্ধির কথা জানিয়ে বলেন, তারা সরকারের কাছে চাল বিক্রির জন্য চুক্তি করতে উন্মুখ কিন্তু আগের মত লোকসান দিয়ে নয়। সভায় বক্তৃতা করেন- সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোহন পাটোয়ারি, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আজিজ, কোষাধ্যক্ষ ও বগুড়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি এটিএম আমিনুল ইসলাম, কুষ্টিয়া চালকল মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ জিন্না আলী, জয়পুরহাট জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি কে এম হাকিম মণ্ডল, রংপুর জেলা চালকল মালিক সভাপতি শামসুল আলম বাবু, বগুড়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক দুদু, দিনাজপুর জেলা চালকল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি প্রতাপ সাহা পানু, নেত্রকোণা জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ এরফান আলী ও নওগাঁ জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আব্দুস সাঈদ।