পদ্মায় বিলীন ‘চরের বাতিঘর’, শিক্ষার্থীদের কা’ন্না

Iqbal Hossain Jwel / ৯৩ দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০

শি’বচর উপজে’লার বন্দরখোলা ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বাতিঘর খ্যাত সেই বিদ্যালয়টি পদ্মায় বিলীনের পথে। বুধবার মধ্যরাতে বিদ্যালয়টির মাঝ বরাবর দ্বিখন্ডিত হয়ে হেলে পড়ে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিদ্যালয়টি নদীর দিকে আরো হেলে পড়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চরাঞ্চলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ঘরবাড়ি ভেঙে নিরাপদ স্থানে ছুটে যাচ্ছে চরাঞ্চলের অসংখ্য মানুষ। এছাড়াও পানিব’ন্দি হয়ে পরেছে হাজার হাজার মানুষ। ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশু নিয়ে দূর্ভোগে দিন কা’টাচ্ছে চরাঞ্চলের মানুষেরা।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উপজে’লার বন্দরখোলা ইউনিয়নের নূরুদ্দিন মাদবরেরকান্দি গ্রামে অবস্থিত এস ই এস ডি পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ তলা ভবনটি হেলে পড়েছে পদ্মায়।
২০০৯ সালে স্থাপিত হয় নূরুদ্দিন মাদবরের কান্দি এস. ই.এস.ডি.পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টি।

বন্দোরখোলা ইউনিয়নের চরাঞ্চলে স্থাপিত এই বিদ্যালয়টির কারণে শি’বচর উপজে’লার বন্দোরখোলা ইউনিয়নের মমিন উদ্দিন হাওলাদারকান্দি. জব্বার আলী মুন্সীকান্দি, বজলু মোড়লের কান্দি, মিয়া আজম বেপারীর কান্দি, রহমত হাজীর কান্দি, জয়েন উদ্দিন শেখ কান্দি, মসত খাঁর কান্দিসহ প্রায় ২৪টি গ্রাম ও ফরিদপুর জে’লার সদরপুর উপজে’লার চর নাসিরপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ছে’লে-মে’য়েরা এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতো। বিদ্যালয়টি ছিল চরাঞ্চলের একমাত্র দৃষ্টিনন্দন তিনতলা ভবনসহ আধুনিক সুবিধা সমৃদ্ধ একটি উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চরের এই বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের সকলেই চরের বাসিন্দা। মূল ভূ-খন্ড এখান থেকে বেশ দূরে হওয়ায় চরের ছে’লে-মে’য়েরা অন্যত্র গিয়ে লেখাপড়া করার সুযোগ পেতো না। এই বিদ্যালয়টি

হওয়ার কারণে এখন চরের ছে’লেমে’য়েরা লেখাপড়া করতো। চরের ছোট ছোট প্রায় ২৪টি গ্রাম থেকে তিনশতাধিক শিক্ষার্থী ছিল বিদ্যালয়টিতে। স্থানীয়রা জানায়, পদ্মা’র নিকটবর্তী হওয়ায় প্রতি বছরই ব’ন্যার পানিতে ডুবে যেতো বিদ্যালয়সহ আশেপাশের এলাকা। গত বছর পদ্মানদী ভাঙতে ভাঙতে পেছন দিক দিয়ে বিদ্যালয়টির নিকটে চলে আসে। এরপর গত বছরই ওই এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকিয়ে রাখে। চলতি বর্ষা মৌসুমেও ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং চলতে থাকে ওই এলাকায়। তবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রচন্ড স্রোতের কারণে জিও ব্যাগ ফেলে তেমন সুবিধা করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বুধবার রাতে তিন তলা ভবনের বিদ্যালয়টির কিছু অংশ হেলে পড়ে।

বন্দরখোলা ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড সদস্য মো. ইসমাইল জানান, ‘বুধবার রাত ১১ টার দিকে হঠাৎ করেই বিকট শব্দ হতে থাকে স্কুলের ভবনের মধ্য থেকে। খবর পেয়ে অসংখ্য মানুষ ট্রলারে করে বিদ্যালয়টি দেখতে আসে। আমাদের সামনেই বিদ্যালয়টি মাঝখান থেকে ফাটল ধরে পেছন দিকে হেলে পড়ে। তিনি আরো জানান, বিদ্যালয়টি মনোরম পরিবেশে একটি দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয় ছিল। গতকাল রাতে বিদ্যালয়টি ভাঙন ধরলে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা কা’ন্নায় ভেঙে পড়ে। চোখের সামনে এভাবে বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে দেখে স্থানীয়রা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির অন্যান্য খবর