বিশেষ প্রতিনিধিঃ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত অনেক কলেজসমূহে গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব পালন না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী এখন থেকে এসব কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্যদের পরিবর্তে বিভাগীয় পর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শুক্রবার (২৪ জুলাই) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
এক রিট মামলায় গত বছর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিতে সংসদ সদস্যদের সভাপতি হিসেবে নিয়োগ বা মনোনয়ন সংবিধানের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে রায় দেয় হাইকোর্ট। ওই রায়ে বলা হয়, একজন সংসদ সদস্যকে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে হয়। অপরদিকে গভর্নিং বডির সভাপতি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পদমর্যাদা সংসদ সদস্যের নিচের পদমর্যাদার। সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্বাচিত সংসদ সদস্য যদি গভর্নিং বডির সভাপতি হন তাহলে কার্যত উক্ত গভর্নিং বডি একটি একক ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে বাধ্য। কারণ নির্বাচিত সংসদ সদস্যের ওপর কথা বলার সাহস গভর্নিং বডির কোনো সদস্যের থাকে না এটাই বাস্তব সত্য।
বিচারপতি মো: আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ অভিমত দেয়া হয়।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছে, সংসদ সদস্য থেকে স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হয়। সংসদ সদস্যরা হবেন জ্ঞানী, সাহসী, সৎ, নির্লোভ এবং দুরদৃষ্টি সম্পন্ন। তিনি কখনই তার পদমর্যাদার নিচের কোন পদে নিজেকে অধিষ্ঠিত করবেন না। সেজন্য গভর্নিং বডির সভাপতির পদ সংসদ সদস্যদের মহান পদের সাথে একেবারেই বিপরীত।
২০১৬ সালের ১৬ জুন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থানীয় সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দারকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আতরজান মহিলা কলেজের গভর্নিং বডিরসভাপতি পদে নিযুক্ত করে। ওই নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এসএম আফজালুল হক। ওই রিটের রুলের উপর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত নভেম্বর মাসে রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট। সম্প্রতি পূর্ণাঙ্গ এ রায় প্রকাশ করে হাইকোর্ট। ওই রায় পর্যালোচনা করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক
মো: মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত এমপিদের স্থলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।