ষ্টাফ রিপোর্টারঃ ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার স্বাধীনতা যুদ্ধে গৌরীপুরের প্রথম শহীদ পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রজেন বিশ্বাসের স্বরণ সভা পালিত হয়নি। তিনি ৭১ এর ২৩ এপ্রিল পাক হানাদারের বুলেটে শহীদ হন।
উল্লেখ্য ১৯৭১ সালে ২৩ এপ্রিল হানাদার বাহিনী ময়মনসিংহের গৌরীপুর প্রবেশ করে তান্ডবলীলা, লুটপাট চালিয়ে ছিল। এদিন (শুক্রবার) সকাল ১১টার মধ্যে ৩/৪ টি বোমারু বিমান গৌরীপুরে আকাশে চক্কর দেয়ার সময় মানুষের দিগি¦দিক দৌড়াদৌড়ি ও আত্বচিৎকারে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিল। বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপে মানুষ নিহত না হলেও এ সময় তিনটি গরু মারা পড়ে ছিল। এদিকে রেলপথ দিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ বোকাইনগর হয়ে অগ্রসর হতে থাকে হানাদার বাহিনী। সে দিন ট্রেন থেকে ভারী অস্ত্র দিয়ে ঝাঁঝড়া করে দিয়েছিল জঙ্গল, বাঁশ ঝাড় বিভিন্ন ঘড়বাড়ি। আক্রান্ত হয়ে ছিল মাঠের কাঁচাপাকা ধান। ভবানীপুর রেল বীজ পাড় হয়ে পাকসেনার একটি দল সড়ক পথে বালুয়াপাড়া হয়ে গৌরীপুর শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। পথে ছয়গন্ডা নিবাসী সতিশা প্রাইমারি স্কুলের বর্তমান (পৌর মডেল) এর সহজ সরল প্রধান শিক্ষক ব্রজেন বিশ্বাস হানাদারের মুখামুখি হলে স্যার নমস্কার দেন, মুহুর্তে হানাদারের বুলেটে তার বুকে বিদ্ধ হলে লুটিয়ে পড়েন রৌদ্রতপ্ত রাজ পথে। তার রক্তে প্রথম সিক্ত হয় গৌরীপুরের মাটি। তিনিই স্বাধীনতা যুদ্ধে গৌরীপুরের প্রথম শহীদ। সুত্রঃ রণজিৎ কর রচিত “গৌরীপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য” পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৪৭। “হিন্দুকা দোকাল লুটো” পাক বাহিনীর এ রকম নির্দেশনায় স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় কালীপুর, মধ্যবাজার দোকানেগুলোতে চালায় লুটতরাজ। মুহুর্তে পৌর শহরে দোকানপাট, বাসা বাড়ী হয়ে পড়ে জনমানব শূন্য এক মুরুভুমি। গৌরীপুর রেল জংশন স্টেশনের পশ্চিম পাশে দাড়িয়ে ছিলেন জগৎ চন্দ্র নমদাস। পাক সেনার গুলিতে তিনিও নিহত হন। শহীদের তালিকায় যুক্ত হয় আরেকটি নাম।
২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল ছয়গন্ডায় এলাকায় গৌরীপুরে প্রথম শহীদ বুদ্ধীজীবি ব্রজেন চন্দ্র বিশ্বাসের স্মরণে “স্মৃতি ফলক নির্মান”, বুদ্ধিজীবি তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত করণের দাবীতে প্রধান মন্ত্রীর বরারবে স্মারক লিপি প্রদান লক্ষে অস্থায়ী বেদীতে প্রথম পুষ্পমাল্য অর্পণ করে স্মরণ করেছিল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এসো গৌরীপুর গড়ি ও বন্ধুজন সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদ। এরপর অস্থায়ী ফলকটি রাতের আধারে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ভেঙ্গে ফেলে।##
নিউজ/রাজ/গৌরী