অবসরপ্রাপ্ত মেজর নিহতের ঘটনা তদন্তে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শক্তিশালী কমিটি

Iqbal Hossain Jwel / ৯৬ দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ২ আগস্ট, ২০২০

বিশেষ প্রতিনিধিঃ কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করে যুগ্মসচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তাকে নেতৃত্বে আনা হয়েছে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে পুনর্গঠিত এই তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
এই কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের একজন প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে থাকবেন, যাকে মনোনীত করবেন ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজারের এরিয়া কমান্ডার।
পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ পুলিশ মহাপরিদর্শকের মনোনীত একজন প্রতিনিধি।
এছাড়া কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলি এই তদন্ত কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন, যাকে শুরুতে এই কমিটির নেতৃত্বে রাখা হয়েছিল। 
এ কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার কারণ ও উৎস অনুসন্ধান করবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে মতামত দেবে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এক সময় স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সে দায়িত্ব পালন করা রাশেদের বয়স ছিল ৩৬ বছর। তার বাবা প্রয়াত এরশাদ খান ছিলেন অর্থমন্ত্রণালয়ের একজন সাবেক উপসচিব।
দুই বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া রাশেদ ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য গত প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন। আরও তিন সঙ্গীকে নিয়ে তিনি উঠেছিলেন নীলিমা রিসোর্টে।
ঘটনার পর কক্সবাজারের পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশেদ তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।
ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের পাশাপাশি এ ঘটনায় আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করে দুটো মামলা দায়ের করার কথাও জানায় পুলিশ।
তবে ঘটনার যে বিবরণ পুলিশ দিয়েছে, তা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। রাশেদ আদৌ অস্ত্র তাক করেছিলেন কি না, তা নিয়ে যেমন সন্দেহ তৈরি হয়েছে, তেমনি পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নিতে দুই ঘণ্টা দেরি হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হওয়ায় শনিবার তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, যা পরে পুনর্গঠন করা হল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল রোববার তার বাসায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন, আর যেহেতু তদন্ত চলছে সেহেতু তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। তবে তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টেকনাফের ওই ঘটনায় বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলিসহ ২০ পুলিশ সদস্যকে ইতোমধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেছেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ওই ২০ পুলিশ সদস্যকে ইতোমধ্যে কক্সবাজার পুলিশ লাইনসে নিয়ে নতুন ২০ জনকে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির অন্যান্য খবর