রায়হান উদ্দিন: ময়মনিসংহের গৌরীপুর উপেজলা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার পূর্বে অচিন্তপুর গ্রামে অবস্থিত এই ঐতিহ্যবাহী তিন শত বছরের পুরনো অচিন্তপুর দুই চালা শিব মন্দিরটি। গভর্নর মুর্শিদকুলি খান অধীনে ঢাকা বিভাগে কর্মরত থাকা অবস্থায় ১৭০০ সালে শ্রীকৃষ্ণ রায় চৌধুরী সেই সময়ের মোমেনসিং পরগণার বন্দোবস্থ নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব ও নবাব মুর্শিদকুলী খানের খুবই আস্থাভাজন। মোগল সম্রাট ও নবাবের কাছ থেকে ’রায় চৌধুরী’ উপাধি গ্রহণ করে শ্রীকৃষ্ণ রায় চৌধুরী নিশান টাঙ্গিয়ে পাঁচশত সৈন্য নিয়ে বোকাইনগর দুর্গের রক্ষকের নিকট আসেন এবং তাকে সাহায্য করার জন্যে নবাবের আদেশ পত্র জমা দেন। বোকাইনগরে এসে প্রথমে রাজবাড়ি তৈরী করেন যার নাম হয় বাসাবাড়ি।বোকাইনগরের মােঘল আমলের ছােট ছােট ইটের তৈরি কালীবাড়ি মন্দিরের পূর্ব দিকে জমিদার শ্রীকৃষ্ণ রায় চৌধুরী ১৭১৩ সালে গোসাই বাড়ির মন্দির স্থাপন করেন। কোন শিলালিপি না থাকায় দুই চালা শিব মন্দিরের নির্মাণকাল সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে অনুমান করা হয় ১৭২০ সালে এ ধরনের শৈল দুচালা মন্দির স্থাপন করা হয়েছিল। জনশ্রুতি অনুসারে .শ্রীকৃষ্ণ রায় চৌধুরী তার কোন মেয়ে বা বোনকে বিয়ে দেন অন্য জমিদারের ছেলের সাথে। বিয়ের কিছু দিন পর স্বামীর দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অল্প বয়সে বিধবা হয় জমিদারের মেয়ে বা বোন। সে সময়ে হিন্দু ধর্মে দ্বিতীয় বিবাহের কোন নিয়ম না থাকায় জমিদারের মেয়ে বা বোন বাকি জীবন পূজা-অর্চনা করে কাটাতে চায়। তার অনুরোধে ১৭১৫ সাল থেকে ১৭২৫ সালের মধ্যে শিব মন্দির স্থাপন করেন ।