ষ্টাফ রিপোর্টারঃ লকডাউনের কারণে ভারতের দিল্লিতে আটকেপড়া ২৫৫ তাবলিগ জামাত সদস্যের মধ্যে ১৪ বাংলাদেশি টানা চার মাস কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন। দুই দেশের হাইকমিশন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে শুক্রবার (৭ আগস্ট) রাতে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফেরেন তারা।
ফেরত আসা তাবলিগ জামাতের সদস্যরা হলেন- সাদ সাইফুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন, আলামিন, ফজলুল হক, আকিব হাসান মাহমুদ, ফেরদৌস আল মাহমুদ, হাফিজুর রহমান, মহিউদ্দিন, নুর মোহাম্মদ সোহান, আমিনুর ইসলাম, মাহবুবর রহমান, শেয়াব, আরিফুল ইসলাম ও রওশন আহসান মহিন। এদের বাড়ি ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকায়।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি মহাসিন কবির জানান, শুক্রবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে তাদের প্রশাসনিক নিরাপত্তায় প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে নেয়া হয়। যশোরের ঝিকরগাছা গাজির দরগায় ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন শেষে তারা বাড়ি ফিরে যাবেন।
জানা যায়, গত মার্চ মাসে তারা পাসপোর্টের মাধ্যমে ভারতে যান। গত ১ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ মসজিদে তাবলিগ জামাতের একটি ধর্মীয় সমাবেশ শুরু হয়। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ২৪ মার্চ ভারতজুড়ে লকডাউন শুরুর সময়ও সেখানে বিভিন্ন দেশের প্রায় দেড় হাজার মানুষের অবস্থান ছিল। নিজামুদ্দিন মারকাজে অবস্থানরতদের অনেকের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর মাওলানা সাদসহ তাবলিগ নেতাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অমান্যের অভিযোগে মামলাও হয়।
ভিসার নিয়ম লঙ্ঘন করায় বাংলাদেশিসহ তাবলিগ জামাতের বিপুল সংখ্যক সদস্যকে আটক করে কারাগারে পাঠায় ভারতীয় পুলিশ। বাংলাদেশি এসব নাগরিকের বিরুদ্ধে করোনা প্রাদুর্ভাবের সময় তাবলিগ জামাতে যোগ দিয়ে ভিসাশর্ত ভঙ্গ, অবৈধভাবে ধর্মপ্রচার কাজে যোগদান এবং সরকারের বিধিভঙ্গ করার অভিযোগ আনা হয়।
ভারতের তাবলিগ জামাতের প্রধান মাওলানা সাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে পুলিশ বলেছে, তিনি সামাজিক দূরত্ব ও বড় ধরনের জনসমাগম বাতিলে সরকারের দেয়া নির্দেশনা উপেক্ষা করে ভক্তদের সমবেত হতে উৎসাহ দিয়েছেন। মারকাজ নিজামুদ্দিন ভবন খালি করতে পুলিশ দুই দফায় নোটিশ পাঠালেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি।
এদিকে লকডাউনের সময় ভিসা নীতিমালা লঙ্ঘন করে ভারতে অবস্থান করায় বাংলাদেশিসহ দুই হাজার ৫৫০ জন বিদেশি তাবলিগ জামাত সদস্যকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আগামী ১০ বছর তাদের ভারতে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।