ময়মনসিংহ অফিস;
ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠান এর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ।অদ্য(৯ সেপ্টেম্বর) বুধবার দুপুর ১ টায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পরিষদের সদস্যগণ এ অভিযোগ তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা পরি
ষদের সদস্য আব্দুল মালেক এ সময় মমতাজ উদ্দীন মন্তা,আছমা-উল -হুসনা, দিলরুবা আক্তার (কাজল) তাজুল ইসলাম বাবুল, একরাম হোসেন, রুহুল আমীন, মাহিবুল হক, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোস্তফা কামাল,এইচ এম খাইরুল বাশার,আঞ্জুমান আরা, মোজাম্মেল হক, আসাদুজ্জামান সাগর, বেগম জোসনারা মুক্তি, আবু বক্কর সিদ্দিক,এ, এস, এম মজিবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জেলা পরিষদের ২০ জন সদস্যের মধ্যে ১৭ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠানের বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অশ্লীল আচরণ, আত্মীয়করণ প্রকল্প গ্রহণের একক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে সরকারের সুনাম নষ্ট করার অভিযোগ আনেন।সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগকারী সদস্যরা লিখিত অভিযোগে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠান পরিষদের প্রথম সভা থেকেই সদস্যগণের প্রতি তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ভাব প্রদর্শন করে আসছেন।শুরু থেকেই সদস্যগনের মতামতকে উপেক্ষা করে স্বেচ্ছাচারী ভাবে বহু সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছেন তিনি একাই।যার ফলে পরিষদ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে এমনকি জেলা পরিষদের নিজস্ব স্থাপনায় তিনি একই প্রকল্পে উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে প্রতিবছর বরাদ্দ দিয়ে জেলা পরিষদের আর্থিক ক্ষতি সাধন করেছেন। ব্যক্তিস্বার্থে প্রথম থেকেই তিনি এ জেলায় একটি নির্দিষ্ট এলাকাতে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে অন্যান্য এলাকাকে বঞ্চিত করেছেন জেলা পরিষদের বহু কাজে তিনি আত্মীয়-স্বজনদের অগ্রাধিকার দিয়েছেন আত্মীয়-স্বজনরা জেলা পরিষদের কর্মকাণ্ডে অন্যায় ভাবে হস্তক্ষেপ করেছেন ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ আর্থিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ অন্যতম সমৃদ্ধ পরিষদ হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন উপলক্ষে প্রতিশ্রুত কর্মসূচি করোনাকালীন এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় চেয়ারম্যান অনীহার কারণে জনগণের পাশে যথাসময়ে উপযুক্তভাবে দাঁড়াতে পারেননি বলে অভিযুক্ত সদস্যরা জানান।সংবাদ সম্মেলনে সদস্যরা আরো জানান,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন সহ জাতীয় বিভিন্ন দিবস পালনে সদস্যগণের সাথে মত বিনিময় এর মাধ্যমে তিনি যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি শুরু থেকেই চেয়ারম্যান ঠিকাদার ও প্রকল্প কমিটির সভাপতির কাছ থেকে উন্নয়ন বরাদ্দের উপর ১২% ঘুষ গ্রহণ করেছেন। যার ফলে ঠিকাদার ও প্রকল্প কমিটির পক্ষে প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বিধায় নিম্নমানের কাজ করার ফলে উন্নয়নকাজ অল্পদিনের মধ্যেই বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের কাজ মানেই নিম্নমানের কাজ এ ধারণা বর্তমানে জনমনে একান্তভাবে বিদ্যমান রয়েছে। চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠানের এহেন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আমরা সকল সদস্যবৃন্দ একাধিকবার প্রতিবাদ করলে তিনি নিজেকে সংশোধন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে উনার কোনো পরিবর্তন হয়নি গত ১৭- ৮-২০২০ ইং তারিখ পরিষদের মাসিক সভায় অতীতের মত তিনি একক ও স্বেচ্ছাচারী ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে থাকলে উপস্থিত সদস্যগণ তার প্রতিবাদ করলে এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান সাহেব উত্তেজিত হয়ে সভা কক্ষ ত্যাগ করেন আমরা সকলে মিলে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলেও তিনি আর সভাকক্ষে ফিরে আসেননি বা পরবর্তীতেও কারো সাথে কোন যোগাযোগ স্থাপন করেননি। এহেন পরিস্থিতিতে অদ্য ২৩-০৮-২০২০ ইং তারিখে আমরা সদস্যবৃন্দ জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে মিলিত হয়ে অত্র জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠানের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, স্বেচ্ছাচারিতা, অদক্ষতা স্বজনপ্রীতি ও সর্বোপরি দুর্নীতির অভিযোগ এনে অনাস্থা জ্ঞাপন করছি। উল্লেখ্য যে, তদন্তপূর্বক অনাস্থা কার্যকর করা পর্যন্ত আমরা সদস্যবৃন্দ জেলা পরিষদের সকল কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকব বলে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করছেন সকল সদস্যগণ। অতএব সদস্যদের দাবি উল্লেখিত বিষয়ের প্রেক্ষিতে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইউসুফ পাঠানের বিরুদ্ধে আনীত অনাস্থা প্রস্তাব যথারীতি কার্যকর করতে তাকে উক্ত পদ হতে অপসারণ পূর্বক অএ জেলা পরিষদের কর্মকাণ্ডকে গতিশীল ও দুর্নীতিমুক্ত করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন সোনার বাংলা বিনির্মাণে সহায়তা করতে আপনাদের সকলের সাহায্য সহযোগিতা কামনা করছি। অভিযোগকারীদের দাবি বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য মাননীয় প্রতিমন্ত্রী স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, সচিব স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় কমিশনার ময়মনসিংহ বিভাগ এর প্রতি জোরদার দাবি জানিয়েছেন।