ময়মনসিংহ অফিসঃ
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক পূর্ব আলোচনা ছাড়াই বিনা নোটিশে ডঃ মুশফিকুর রহমান শুভ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি গুড়িয়ে দিয়ে জমির দখল নেয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংশা নতুবা হীনমানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন বলে ১১ নভেম্বর বুধবার বিদ্যালয়টি পূনরায় চালুর দাবিতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করে এ সকল কথগুলোা বলেন। শত শত লোকের অংশ গ্রহনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে কোমলমতি কিশোরীরা তাদের প্রাণের আবেগ ধরে তুলে বিদ্যালয়ের প্রতি ভালোবাসার আবেগ প্রকাশ করেন। বিদ্যালয়টি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে লেখাপড়ার সুযোগ করে দিতে মসিকে’র মেয়র ও শিক্ষা প্রশাসনের কাছে তারা দাবী জানিয়েছেন। মসিক বিনা নোটিশে বিদ্যালয়টি গুড়িয়ে দেয়ায় শিক্ষার্থীরা মর্মাহত। এটি তাদের প্রাণের বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা অনেকে বেতন না দিয়ে ও শিক্ষকরা বেতন না নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন। তারা বিদ্যালয়টি পুনঃস্থাপন দেখতে চায়। আজ মানববন্ধন করা এটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য বলে জানান।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, উক্ত উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহাদাৎ হোসেন, ম্যানেজিংক কমিটির সদস্য জিন্নত আলী ফরাজি, কমিটির সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ বাবুল, সহকারী শিক্ষক আশরাফ হোসেন রবিন, খাদিজা বেগম (অভিভাবিকা), স্বপ্না মন্ডল (শিক্ষিকা), শিক্ষার্থী সাবিনা ইয়াসমিনসহ অনেকে। মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন শত শত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী ।
মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ডাঃ শুভ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ময়মনসিংহ জেলায় হীনমানসিকতার কাজ করেছে মসিক। আমরা জেলা প্রশাসক এবং মেয়রের কাছে সবিনয় অনুরোধ করবো, যেন আমাদের ডঃ মুশফিকুর রহমান শুভ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি যেভাবে গুড়িয়ে দিয়েছেন সেভাবেই প্রতিষ্ঠানটি পুনঃস্থাপনের জন্য আহবান জানাচ্ছি। আপনাদের রাজনীতিতে পক্ষ-বিপক্ষ থাকতে পারে এজন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে গুড়িয়ে দেয়া রাজনীতির ফায়দা হাসিল নয়! এখানে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কাজ করে থাকে তাহলে আমরা ঘৃণা জানাই। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রতিফলন ঘটতে পারে না। ২৬০ জন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে ৮০% শিক্ষার্থী বিনা বেতনে পড়াশোনা করে। এখানে শিক্ষক-কর্মচারী নামমাত্র বেতনে শিক্ষা দান করে যাচ্ছে।
বক্তরা বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর নারী শিক্ষার প্রসারে সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে ডঃ মুশফিকুর রহমান শুভ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি। সেই সাথে জেলা প্রশাসক, মসিক মেয়র ও শিক্ষা প্রশাসনের কাছে বিদ্যালয়টি পুনঃস্থাপনের জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা আকুয়াবাসী এবং ময়মনসিংহবাসী ময়মনসিংহকে অচল করে দিবো। বিদ্যালয়টি যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন ১৫০ ফুট লম্বা ৮ কক্ষ বিশিষ্ট টিনের ঘর ছিলো। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বরাদ্দকৃত অর্থে ১২৫ ফুট লম্বা ৩ তলা ফাউন্ডেশনের ১ তলা কমপ্লিট ভবন নির্মান করা হয়। সেই বিল্ডিংয়ের তালা ভেঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জমি উদ্ধারের নামে বিদ্যালয়ের ৩০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় মসিক। বিনা নোটিশে ও কোনরূপ পূর্ব আলোচনা ছাড়াই কিভাবে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুড়িয়ে দেয়া হলো এটা দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন রয়ে গেল। এতে কি কোন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কাজ করছে? কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর কোন বিবেকবান মানুষের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থাকতে পারে না। অনতিবিলম্বে বিদ্যালয়টি পুনঃস্থাপন করে নিম্ন আয়ের মানুষের মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ করে দেন।
এসময় বক্তরা বলেন, বাংলাদেশর নারী শিক্ষা ভারত থেকে এগিয়ে আর সেই দেশেই নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মসিক গুড়িয়ে দিয়েছে! এই উচ্চ বিদ্যালয়টি গুড়িয়ে দেয়ায় সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ হয়েছে এবং এর দায়-দায়িত্ব মসিকের মেয়রকেই নিতে হবে। যদি ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই বিদ্যালয়টির অবশিষ্ট পাকা ভবনের তালা খুলে দিয়ে পুনরায় চালু করে না দিলে আমরা ময়মনসিংহবাসী মনে করবো রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ করার কারণে মসিক মেয়র এই কাজটি করেছেন। যদি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পাকা ভবনটির তালা খুলে দেয়া না হয় আমরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে ময়মনসিংহ অচল করে দেয়ার কর্মসূচী দিতে বাধ্য হব।
কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন রেখে বলে, কেন তারা আমাদের শিক্ষার আলোকে বন্ধ করে দিচ্ছে? কেন আমাদের শিক্ষার আলোকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে? স্কুল কেন তারা গুড়িয়ে দিয়েছে? শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ আছে, কেন তারা এতগুলো শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিচ্ছে? আমাদের স্কুল পুনরায় ফিরিয়ে দিতে হবে। এদেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী, সে দেশে কেন তারা নারীদেরকে এভাবে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত