ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাসান মারুফকে হুমকি ও সরকারি কর্তব্যকাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
২১ ফেব্রুয়ারি (রোববার) রাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গৌরীপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা, সহনাটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান গোলাপসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪০/৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
২১ ফেব্রুয়ারি (রোববার) আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি ও বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন খান। অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ। এই অনুষ্ঠানকে ঘিরেই ঘটনার সূত্রপাত হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রোববার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ২১ ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানের কর্মসূচি তৈরির সময় ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা ও তার অনুসারীরা সেখানে প্রবেশ করে। এসময় তারা অনুষ্ঠানের ব্যানারে ভাইস চেয়ারম্যান এর নাম নেই কেন জানতে চায়। পরে এই বিষয়টি নিয়ে ইউএনও ও তার অফিসের স্টাফদের সাথে অশোভন আচরণ ও ইউএনওকে হুমকি প্রদান করে ভাইস চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা। এসময় অনুষ্ঠানের স্ক্রিপ্ট ছিঁড়ে ফেলা ও অপ্রীতিকর ঘটনার কারণে অনুষ্ঠানটি এক ঘন্টা পিছিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ বলেন, বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তে সব বের হয়ে আসবে। এই মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে এর চেয়ে বেশি মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, ইউএনও সাহেব এখানে যোগদানের পর আমি অফিসের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অনিয়মের খোঁজ-খবর নিতে শুরু করলে আমার সাথে উনার মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এজন্য তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ব্যানারে আমার নাম বাদ দিতেন। ২১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠানের ব্যানারে নাম না থাকায় আমি উনার সাথে কথা বলে কারণ জানতে চাইলে তিনি খারাপ আচরণ করেন। এসময় কিছুটা উচ্চবাচ্য হয়। তবে হুমকি দেয়ার অভিযোগ সত্য নয়।
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে।