ষ্টাফ রিপোর্টার;
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে স্বেচ্ছাসেকলীগ নেতা মাসুদুর রহমান শুভ্র হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিলের পরদিন মামলার বাদী নিহতের ছোট ভাই আবিদুর রহমান প্রান্ত (২৪) সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৬ মে) রাতে গৌরীপুর পৌর শহরে কালিপুর মধ্যম তরফ এলাকায় এ হামলার ঘটনাটি ঘটে। এসময় কয়েকটি মটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত গৌরীপুর পৌর যুবলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মিথুনসহ পাঁচজনকে আটক করেছে গৌরীপুর থানার পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নিহত শুভ্র’র চাচা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাদেকুর রহমান সেলিম জানান, ঘটনারদিন উপজেলার বোকাইনগর এলাকায় জনৈক এক অসুস্থ্য ব্যক্তিকে দেখতে গিয়েছিল প্রান্ত। সেখান থেকে মটর সাইকেলযোগে বাসায় ফেরার পথে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে পৌর শহরে কালীপুর মধ্যম তরফ এলাকায় সশস্ত্র মটর সাইকেলের বহর নিয়ে প্রান্ত’র উপর অতর্কিতে হামলা চালায় শুভ্র হত্যা মামলার আসামীদের লোকজন। এসময় হামলাকারীরা কয়েকটি মটর সাইকেল ভাংচুর করে।
তিনি বলেন, শুভ্র হত্যা মামলায় পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামসহ ১৯ জনের নামে বুধবার (৫ মে) আদালতে চার্জশিট দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মামলার বাদী প্রান্তকে প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে পরদিন পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালায় সন্ত্রাসী লোকজন। পৌর মেয়রের ঘনিষ্ট আত্মীয় মেহেদী হাসান মিথুন এ সশস্ত্র হামলার নেতৃত্ব দেন। হামলাকালে প্রান্তকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষনও করা হয় বলে তিনি জানান।
সাদেকুর রহমান সেলিম আরও বলেন, নিহত মাসুদুর রহমান শুভ্র উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বিআরডিবি’র চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব সফলভাবে পালনের পাশাপাশি ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ করে আসছিল। এসময় স্থানীয় ভোটারদের কাছে শুভ্র’র গ্রহনযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে গত বছর ১৭ অক্টোবর গৌরীপুর মধ্যবাজার এলাকায় তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
তিনি জানান, এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে পৌর মেয়র গ্রুপের বিভিন্ন হুমকীর মুখে নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের পরিবারের লোকজনদের। তাই তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও শুভ্র হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন করার জোর দাবি করেন তিনি।
গৌরীপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী জানান, আবিদুর রহমান প্রান্তর ওপর হামলা ও মটর সাইকেল ভাংচুরের ঘটনায় জড়িত মেহদী হাসান মিথুনসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের জোর অভিযান চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য শুভ্র হত্যা মামলায় পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ও তার দুই ভাই এবং ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াদুজ্জামান রিয়াদ বর্তমানে উচ্চ আদালতের জামিন রয়েছেন।