আজ ২৭ জানুয়ারি শহীদ হারুন দিবস। ১৯৬৯ এর এই দিনে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে তৎকালীন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ৬ দফা ও ১১ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে সারা দেশের ন্যায় গৌরীপুরে’র ছাত্র-জনতাও রাজপথে আন্দোলনে নামে। এ উপলক্ষে গৌরীপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, হারুন স্মৃতি পরিষদের উদ্দ্যোগে গৌরীপুর সংগীত নিকেতনের পরিবেশনায় প্রভাত ফেরী, শহীদ মিনারে পুস্পমাল্য অর্পন, মিলাদ, দোয়া মাহফিল ও হারুন পার্কে স্মরনসভা’র আয়োজনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালনের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে।
৬৯-এ সারা দেশের ন্যায় গৌরীপুরে প্রতিদিন চলতে থাকে মিটিং-মিছিল। এতে অংশ নেয় গৌরীপুরের ছাত্র-জনতার আন্দোলন। এ আন্দোলন স্থব্ধ করতে ময়মনসিংহ থেকে আনা হয় দাঙ্গা পুলিশ। ২৭ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের নির্দেশ মোতাবেক শত বাঁধা উপেক্ষা করে গৌরীপুর কলেজের ছাত্ররা যখন শান্তিপূর্ণ মিছিল করে শহর প্রদক্ষিণ করেছিল তখন বিনা উস্কানিতে পুলিশ ছাত্রদের মিছিলে লাঠির্চাজ করে। এতে কয়েকজন ছাত্র নেতা আহত হয় এবং মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে ছাত্র নেতারা পূনরায় জড়ো হয়ে হরতালের স্বপক্ষে শ্লোগান দিয়ে গৌরীপুর মধ্যবাজারের বড় মসজিদের সামনে আসার সময় কোন রকম সর্তকতা না দিয়ে পুলিশ ছাত্র-জনতার মিছিল লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে গৌরীপুর কলেজের বিএ পরীর্ক্ষাথী আব্দুল আজিজ ওরফে হারুন ঘটনাস্থলেই শহীদ হন। পুলিশ শহীদ হারুনের লাশ আটকে রেখে শহরে ১৪৪ ধারা জারি ও ১৭জন ছাত্র নেতা’র নামে হুলিয়া জারি করে। ঘটনার দু’দিন পর হারুনের লাশ প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে তার গ্রামের নিজ বাড়ি নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের সামারুল্লাহ গ্রামে পারিবারিক গোরস্থানে সমাহিত করা হয়।
এরপর থেকে প্রতি বছর গৌরীপুরে ২৭ জানুয়ারি “শহীদ হারুন দিবস” যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে। হারুন যে স্থানে গুলিবিদ্ধ হয় মুক্তিযুদ্ধের পর এই স্থানটির পাশেই তৎকালীন ধানমহালকে গৌরীপুর বাসী নাম রাখে শহীদ হারুন পার্ক। মুক্তিযুদ্ধের পর এখানে গড়ে উঠছে শহীদ মিনার ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। গৌরীপুর পৌর শহরে বিভিন্ন রাজনৈতিক সামজিক,ধর্মীয় সংগঠনের সভা-সমাবেশের একমাত্র কেন্দ্রস্থল ছিলো এ হারুন পার্ক। কিন্তু বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স গড়ে উঠায় পার্কটি ছোট হয়ে গেছে।