জর্ডানে আকর্ষণীয় বেতনে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্ধশত গার্মেন্টস কর্মীর লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় দেলোয়ার হোসেন রমযান (৩০) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী গার্মেন্টস কর্মীরা ওই যুবকের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে লাঞ্চিতের পাশাপাশি নানা হুমকী দিচ্ছেন। প্রতারক যুবকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকা উদ্ধারের জন্য প্রায় ৬ মাস ধরে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা তারা।
দেলোয়ার হোসেন রমযান ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার পৌরসভার সতিষা এলাকার দেওয়ান হোসেনের ছেলে।
ভুক্তভোগী গার্মেন্টস কর্মীদের পক্ষে মতিউর রহমান (৩৫) গৌরীপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের অভিযোগ করে জানান, গাজীপুর জেলার শ্রীপুর এলাকায় গার্মেন্টেসে চাকুরির সুবাদে তাদের পরিচয় হয় সহকর্মী দেলোয়ার হোসেন রমযানের সঙ্গে।
গত বছর (১৪ জানুয়ারী) বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের বাংলাদেশ ওভাসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের একটি প্যাডে জর্ডানে আকর্ষণীয় বেতনে গার্মেন্টস কর্মী নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আগ্রহীদের যোগাযোগের জন্য দেলোয়ার হোসেন রমযানের ব্যবহৃত ০১৯১৪-২৬৬৪৪৯ ও ০১৭৮২৭৬৭৪৮০ দুটি মোবাইল নাম্বার উল্লেখ করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে শ্রীপুর এলাকায় গার্মেন্টেসে চাকুরীরত বিভিন্ন এলাকার অর্ধশত গার্মেন্টস কর্মীদের কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা করে আদায় করেন দেলোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, টাকা আদায়ের পর গত বছর ২৫ আগস্ট ভিসা প্রদান ও ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয়ার কথা বলে রাজধানীর উদ্দেশ্যে তাদেরকে একটি বাসে উঠিয়ে কৌশলে নিজ বাড়িতে চলে আসেন দেলোয়ার হোসেন। এদিকে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে এদিন হতাশ হয়ে ফিরে আসেন তারা। এরপর ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সতিষা এলাকায় দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে গিয়ে পাওনা টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে নানা হুমকী-ধমকী দিয়ে ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেয়া হয়।
মতিউর রহমান জানান, বিদেশে আকর্ষণীয় বেতনের চাকুরির আশায় ধার-দেনা করে দেলোয়ার হোসেনকে টাকা দিয়েছেন তারা। প্রতারক যুবকের খপ্পরে পড়ে বর্তমানে তারা সর্বশান্ত হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। হাতিয়ে নেয়া টাকা উদ্ধারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দেলোয়ার হোসেন রমযানের ভাই আনোয়ার হোসেন শরীফ জানান, ভুক্তভোগী অধিকাংশ গার্মেন্টস কর্মীদের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। তাদের মাঝে কয়েকজনকে ইতিমধ্যে বিদেশে পাঠিয়েছেন তারা।
এদিকে আনোয়ার হোসেন শরীফের বক্তব্যকে মিথ্যা ও বনোয়াট বলে মন্তব্য করে অভিযোগকারী মতিউর রহমান জানান, ভুক্তভোগী গার্মেন্টস কর্মীদের মাঝে কারও টাকা ফেরত দেননি ও কাউকে বিদেশেও পাঠায়নি প্রতারক যুবক দেলোয়ার হোসেন রমযান।