ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বিএনপির ইফতার অনুষ্ঠান পণ্ড করতে গিয়ে পুলিশের পিটুনির শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মীও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। শনিবার বিকেলে স্থানীয় চরনিখলা উচ্চ বিদ্যালয় স্কুলমাঠে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আয়োজনে চরনিখলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। শনিবার দুপুরে থেকে স্কুল মাঠের এক পাশে বসার জন্য টেবিল পেতে ও পেছনে কাপড় টানিয়ে সাজসজ্জা করা হয়। সামনে কয়েকশত চেয়ারও দেওয়া হয়। তবে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পৌর সদর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনের এলাকা থেকে একটি মিছিল বের হয়। সেখানে বিএনপির আয়োজিত অনুষ্ঠানটির বিরুদ্ধে শ্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাসহ সহযোগী ও অংগসংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলে রামদা, রড ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র হাতে শ্লোগান দিয়ে বিএনপির অনুষ্ঠান স্থলের দিকে যায়। তারা একদফা ভেতরে ইটপাটকেল ও ভাঙচুর চালিয়ে পুনরায় মিছিল করেন। এরপর আবার বিএনপির অনুষ্ঠান স্থলে যায়। এসময় পুলিশি বাধার মুখে পড়েন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে গিয়ে পুলিশের প্রতিরোধের শিকার হন হামলাকারীরা।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দাবি, পুলিশের পিটুনিতে ছাত্রলীগ নেতা আবু রায়হান, মৎস্যজীবি লীগ শামীম মিয়া, ছাত্রলীগের তুষার, শফিকুল ইসলাম ওরফে হাড্ডি বাবু, আবু সাঈদসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলায় পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক পলাশ, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রনি ও লিটনসহ কয়েকজন আহত হন বলে জানা গেছে। তবে কোনো পক্ষের কর্মীকেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়নি।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সামি উসমান গণি সমকালকে জানান, বিএনপির অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ও সরকারকে নিয়ে মন্তব্য করায় তারা এগিয়ে যান। ওই সময় বিএনপির পক্ষ নিয়ে পুলিশ তাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদুল ইসলাম ভুঁইয়া সুমন বলেন, ‘সারা দেশে যখন সরকারের নেতৃত্বে উন্নয়নের জোয়ার, তখন বিএনপি-জামায়াত বারবার ষড়যন্ত্র করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রায়ই কর্মসূচি করে। তারই প্রতিবাদে মিছিল বের করলে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন আমাদের ওপর আক্রমণ করে। এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে পুলিশ ছাত্রলীগের ছেলেদের ওপরই আক্রমণ চালালো, তা দেখে হতবাক হয়েছি। প্রশাসন হঠাৎ করে কার ইশারায় এমন করলো তা ঈশ্বরগঞ্জবাসী জানতে চায়।’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি নিয়ে ইফতারের আয়োজন করা হয়। উপজেলা প্রশাসন ও থানায়ও অবহিত করা হয়েছিল। বিভিন্ন কন্ডিশন মেনে শুধু বসার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’ তিনি বলেন, ‘যারা হামলা করেছে তাদের আওয়ামী লীগ বলবো না। তারা এন্ট্রি আওয়ামী লীগ বলে মনে হয়েছে আমার। এরা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী অংশ।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল কাদের মিয়া বলেন, ‘ইফতার মাহফিলে ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।’