আবুল কাশেম আকন্দ,কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) সংবাদদাতাঃ
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বঙ্গবন্ধু জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল (অনূর্ধ্ব-১৭, বালক) টুর্ণামেন্টের সেমিফাইনাল খেলায় দুপক্ষের মারামারিতে দুজন আহত হয়েছেন।
রোববার (২২ মে) বিকালে কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়ন একাদশ বনাম চিরাং ইউনিয়ন একাদশের মধ্যে অনুষ্ঠিত খেলা চলাকালে এ মারামারির ঘটনা ঘটে। তবে কেন্দুয়া থানা পুলিশ দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ঘটনায় আহত দুজন হলেন, রফিক মিয়া ও নূরে আলম। রফিক পৌরশহরের কান্দিউড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং নূরে আলম উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের ছিলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নূরে আলমকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মরত চিকিৎসক।
এদিকে ঘটনার পরপরই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা বেগম। উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আতাহার আলীকে আহবায়ক করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, কেন্দুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী হোসেন ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য লাকী আক্তার। তদন্ত কমিটিকে আগামীকালের (সোমবার, ২৩ মে) মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফুটবল খেলা চলাকালে চিরাং ইউনিয়ন একাদশের ১১ নম্বর জার্সি পরিজিত খেলোয়ার আল আমিন খেলার শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে রেফারি তাকে লাল কার্ড প্রদর্শন করে। পরে এ নিয়ে চিরাং ইউনিয়নের খেলোয়ারসহ খেলা দেখতে আসা ওই ইউনিয়নের লোকজন রেফারির ওপর চড়াও হয়। এ সময় স্থানীয় কিছুসংখ্যক লোক রেফারির পক্ষ নিলে উভয়পক্ষের লোকজন মারামারিতে লিপ্ত হন। এতে খেলা দেখতে আসা রফিক মিয়া ও নূরে আলম আহত হন।
চিরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এনামুল কবীর খান বলেন, আমার ইউনিয়নের সবচেয়ে ভালো খেলোয়ার আল আমিন। তাকে রেফারি লাল কার্ড দেখানোর পর খেলোয়াররা রেফারির প্রতি ক্ষিপ্ত হলে আমি রেফারিকে নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু স্থানীয় উৎসাহী কিছু লোকজন রেফারির পক্ষ নিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হয়। এতে আমার গ্রামের বাসিন্দা নূরে আলম মারাত্মক আহত হয়েছে।
মোজাফরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকির আলম ভূইয়া বলেন, খেলা চলাকালে চিরাং ইউনিয়নের খেলোয়ার আল আমিন আমার ইউনিয়নের গোলকিপারের শরীরে হাত তুলে। পরে রেফারি তাকে ওই খেলোয়ারকে লাল কার্ড দেখায়। পরে তারা লাল কার্ড প্রত্যাখান করে রেফারিকে মারতে এলে মারামারি শুরু হয়। এক গোলে পিছিয়ে থাকা মোজাফরপুর ইউনিয়ন একাদশ চিরাং ইউনিয়ন একাদশের কাছে খেলা ছেড়ে দেন বলেও জানান চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ফুটবল খেলায় মারামারির বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনার সঙ্গে মূলত কারা জড়িত সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।