কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) সংবাদদাতাঃ
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় শতবর্ষী সরকারি একটি খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। এদিকে প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে ওই খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকার কয়েক শতাধিক লোকজন।
শনিবার (২৮ মে) দুপুরে কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের বলাইশিমুল গ্রামের ঐতিহ্যবাহী ওই খেলার মাঠে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় বাসিন্দা এডভোকেট মিজানুর রহমান বিএসসি, স্থানীয় শিক্ষক নুরুল আমিন সবুজ, স্থানীয় বাসিন্দা আতিকুর রহমান চুন্নু, হাবিবুর রহমান মন্ডল ও সাবেক ইউপি সদস্য হায়দার আলী তালুকদার প্রমুখ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বলাইশিমুল গ্রামে অবস্থিত সরকারি শতবর্ষী খেলার মাঠের ভূমির পরিমান ১ একর ৮০ শতাংশ। বলাইশিমুল ইউনিয়নের একমাত্র এ মাঠ এটি। এ মাঠে সুদীর্ঘকাল ধরে খেলাধুলা করে আসছে ইউনিয়নটির বিভিন্ন গ্রামসহ আশপাশের ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। কিন্তু সম্প্রতি মাঠের একাংশে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। এ অবস্থায় মাঠ রক্ষার দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেছে এলাকার জনসাধারণ।
বলাইশিমুল গ্রামের স্কুলছাত্র মুজাহিদুল ইসলাম জানায়, লেখাপড়ার পাশাপাশি আমরা এ মাঠে খেলাধুলা করে সময় কাটাই। কিন্তু মাঠে গুচ্ছগ্রাম হলে আমাদের চরম ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই আমাদের দাবি, খেলার মাঠে গুচ্ছগ্রাম না করে অন্যত্র তা করা হোক।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হুমায়ূন কবীর বলেন, আমাদের বলাইশিমুল গ্রামের খেলার মাঠটি বহু পুরনো। এখানে আমাদের বাপ-দাদারা খেলাধুলা করেছেন। পরে আমরা করেছি। এখন বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থী এখানে প্রতিনিয়ত খেলাধুলা করে আসছে। এখানে আশ্রয়ণ প্রকল্প হলে এলাকার শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করার মতো আর কোনো জায়গা থাকবে না। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বলাইশিমুল ইউনিয়নের সাবেক সদস্য হায়দার আলী তালুকদার বলেন, এ মাঠের আশেপাশে সরকারি প্রচুর খাস জমি রয়েছে। ওইসব জায়গায় আশ্রয়ণ প্রকল্পটি নির্মাণ করে ঐতিহ্যবাহী এ মাঠকে রক্ষার জন্য আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এখানে যোগদানের পূর্বেই ওই মাঠের একাংশে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি নিয়ে গত সমন্বয় সভায়ও আলোচনা হয়েছে। আশেপাশে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের উপযোগী খাস জমি না থাকায় আমরা খেলার মাঠের একপাশে ৫০ শতাংশ জায়গা নিয়ে আবাসন করতে চাচ্ছি এবং খেলার মাঠটিরও উন্নয়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এলাকার লোকজনের সাথে কথা এ বিষয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ইউএনও।