কেন্দুয়া ( নেত্রকোনা) থেকে এ,কাশেম আকন্দ
পূর্ববিরোধের জের ধরে মারামারিতে আহত এক ব্যক্তির মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (৩ অক্টোবর) সকালে কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের বানিয়াগাতী (কুড়ের পাড়) গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
খবর পেয়ে দুপুরে কেন্দুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী হোসেন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকির আলম ভূইয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, গত তিন মাস আগে স্থানীয় নদীতে গরুকে গোসল করানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বানিয়াগাতী গ্রামের মৃত আশদ আলীর ছেলে কামাল মিয়া ওরফে এলেফ মিয়ার সাথে পার্শ্ববর্তী তাড়াইল উপজেলার ধলা ইউনিয়নের তেউরিয়া গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়ার বিরোধ দেখা দেয়। এরই জের ধরে কয়েকদিন আগে এলেফ মিয়া স্থানীয় একটি বাজারে যাওয়ার পথে সোহেল মিয়া তাকে মারধর করে। ঘটনাটি মীমাংসা করতে গত রোববার রাতে এলেফ মিয়ার বাড়িতে আসেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় এক পর্যায়ে এলেফ মিয়ারা প্রতিপক্ষের রেজাক মিয়া নামে একজনকে চড়-থাপ্পর মারলে তারা চলে যান এবং রেজাক মিয়াকে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওইদিন রাতেই সোহেল মিয়াসহ তেউরিয়া গ্রামের লোকজন গুজব ছড়ান যে, রেজাক মিয়া মারা গেছেন। এ অবস্থায় মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে সোমবার ভোরে সোহেল মিয়া, মজিবুর ও জিয়ার নের্তৃত্বে তেউরিয়া গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রাদি নিয়ে এলেফ মিয়াদের বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ সময় তারা তিনটি বসতঘর, একটি দোকান ঘর ভাংচুর করে নগদ অর্থ ও স্বর্ণাংকারসহ ১৩টি গরু ও ৬টি ছাগল লুটে নিয়ে যায়।
স্থানীয় মোজাফরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকির আলম ভূঞা বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। পুলিশও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কেন্দুয়া ও তাড়াইল থানার পুলিশ এবং তাড়াইলের ধলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফরোজ আলম ঝিনুকের সহযোগিতায় এরইমধ্যে লুটে নেওয়া ৮টি গরু, ৪টি ছাগল ও দুটি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যান্য মালামালও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী হোসেন বলেন, আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজনসহ তাড়াইল থানার ওসির সাথে কথা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কেউ মারা যায়নি। মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে এ ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। যেহেতু পূর্ববিরোধের জের ধরে দুই থানার লোকজনের মধ্যে এ ঘটনাটি ঘটেছে, তাই উভয়পক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে লুটপাটকৃত গরু, ছাগলসহ অন্যান্য মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায়
প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।