লেখাপড়ার কোন বয়স নেই। এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে বাবা-ছেলে এক সঙ্গে পাশ করে ব্যতিক্রমী সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ৪৫ বছর বয়স্ক মো: এখলাস উদ্দিন নয়ন। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।
এর মধ্যে এখলাস উদ্দিন নয়ন পাশর্^বর্তী কেন্দুয়া উপজেলার মগরাই আদর্শ কারিগরি ইন্সটিটিউট থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তাঁর ছেলে মোহাম্মদ রায়হানও(১৭) পেয়েছেন জিপিএ-৫। সে গৌরীপুর টেনকিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী।
এনিয়ে অদম্য এই ইউপি সদেস্যর পরিবারে খুশির আমেজ সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে গৌরীপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) সালমা আক্তার রুবি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ সময় তিনি এখলাস উদ্দিন নয়নকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, লেখাপড়ার কোন বয়স নেই, এখলাস উদ্দিন নয়ন তা প্রমাণ করেছে। এখন তিনি সুন্দর সমাজ গঠনে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারবেন বলেও আশা করছি।
এবিষয়ে এখলাস উদ্দিন নয়ন জানান, বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে আমার লেখাপড়া করার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু স্ত্রী সমলা বেগমের কারণেই ছেলের সাথে আমাকেও পরীক্ষা দিতে হয়েছে। লেখাপড়ায় আমার চেয়ে তাঁর আগ্রহ বেশি।
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষা দেওয়ার সময় কিছুটা শরম লাগলেও ফলাফল পেয়ে এখন ভালো লাগছে। নিয়ম করেছি ছেলের সঙ্গে আমিও কলেজে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাব।
জানা যায়, ছেলে-মেয়ে নিয়ে ৪ সদস্যের সংসার এখলাছ উদ্দিন নয়নের। এর মধ্যে মেয়ে আঁখি আক্তার ইতিমধ্যে বিএ (ব্যাচেলর অব আর্টস) পাশ করেছে। আর ছোট ছেলে রায়হান বাবা সঙ্গে এবার পাশ করেছে এসএসসি।
এ খবরে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ। তিনি বলেন, খবরটি শুনে ভালো লেগেছে। শিক্ষার কোন বয়স নাই, শিক্ষা প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার। অদম্য এই বাবাকে দেখে সাধানুষ মানুষ লেখাপড়া আরও অনুপ্রাণিত হবে বলেও মনে করছি।