টেকাব প্রকল্পের অনিয়মঃ কেন্দুয়ায় বেকার যুবদের তালিকায় চাকরিজীবীদের নাম

juel / ৪৬ দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

কেন্দুয়া( নেত্রকোনা) সংবাদ দাতা

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের টেকাব প্রকল্পের দুই মাস ব্যাপী কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য প্রশিক্ষণার্থী বাছাইয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বঞ্চিত প্রশিক্ষণার্থীসহ সচেতন মহলে সমালোচনা চলছে। এছাড়া উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত নির্বাচিত প্রশিক্ষণার্থীদের চূড়ান্ত তালিকায় বেকার যুব ও যুব মহিলাদের পরিবর্তে এমপিওভুক্ত একটি মাদরাসার চাকরিজীবীর নামসহ উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলের বউয়ের নাম থাকায় তালিকাটি বাতিল করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পুনরায় তালিকা করার দাবি উঠেছে।

উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিস ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, টেকাব প্রকল্পের দুই মাস ব্যাপী কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য ২০ জন পুরুষ ও ২০ জন নারীসহ মোট ৪০ জন প্রশিক্ষণার্থী বাছাইয়ের লক্ষ্যে গত ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন আহবান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিস। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ৭টি শর্ত উল্লেখ করে দেওয়া হয়। এক নম্বর শর্ত দেওয়া হয়- বেকার যুব ও যুব মহিলারাই শুধু আবেদন করতে পারবে এবং দুই নম্বর শর্ত দেওয়া হয়- ন্যাশনাল সার্ভিসের কর্মীরা এবং টেকাব প্রকল্পে পূর্বে প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা আবেদন করতে পারবে না। এ অবস্থায় প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী মোট ২৩৭ জন আবেদন করলে বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী জালাল উপস্থিত থেকে তার কার্যালয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা নেন। পরীক্ষা শেষে ওইদিন বিকালেই নির্বাচিত ৪০ জনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ তালিকায় আরও ১০ জনকে অপেক্ষমান হিসেবেও রাখা হয়।

তালিকা প্রকাশের পরপরই তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নানারকম অনিয়মের অভিযোগ উঠে এবং এ তালিকা বাতিল করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পুনরায় তালিকা করার দাবি তুলেন বঞ্চিত প্রশিক্ষণার্থীসহ সচেতন লোকজন।

প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকা থেকে জানা গেছে, নির্বাচিত প্রশিক্ষণার্থী আনিসুল হক আনিস। তিনি উপজেলার রাজঘাট আলিম মাদরাসার অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন এবং তার স্ত্রী সায়মা সুলতানাও নির্বাচিত হয়েছেন। এ প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত আরেক প্রশিক্ষণার্থী হলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলামের ছেলের বউ লিজা আক্তার। তিনিও উপজেলার রাজঘাট আলিম মাদরাসার অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়া পূর্বে প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরাসহ ন্যাশনাল সার্ভিসের কর্মীদের নামও এ তালিকায় রয়েছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রশিক্ষণের জন্য আবেদনকারী জানান, শুধু শুধু আমাদের নামমাত্র ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে। এটা ছিল মূলত আইওয়াশ। প্রকৃতপক্ষে তদবিরের লোকজনের নাম তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা এ তালিকা মানি না। তা বাতিল করে সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন তালিকা প্রকাশের দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আলা উদ্দিন বলেন, নিয়মের বাইরে যদি তালিকায় কারো নাম থেকে থাকে তাহলে তা বাতিল করা হবে। এছাড়া চূড়ান্ত তালিকা করেছেন ইউএনও স্যার। এতে আমাদের কোনো হাত নেই।

এ নিয়ে শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী জালাল বলেন, সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার মাধ্যমে নির্বাচিত প্রশিক্ষণার্থীদের তালিকা করা হয়েছে। এরপরও যদি নিয়মের বাইরে কোনো নাম তালিকায় এসে থাকে তবে আমরা তা বাতিল করে দেব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির অন্যান্য খবর