কেন্দুয়ায় প্রকৌশলী-ঠিকাদার দ্বন্দ্বঃ আটকে আছে উন্নয়ন কাজ

juel / ৪৩ দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৩

কেন্দুয়া ( নেত্রকোনা) সংবাদ দাতা

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী মোজাম্মেল হকের সাথে স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদারের দ্বন্দ্ব চরমে পৌছেছে। এরই জের ধরে প্রকৌশলী উন্নয়ন কাজের জন্য কোনো তদারকি কর্মকর্তা না দেওয়াসহ সাইট বুঝিয়ে না দেওয়ায় রিয়াজ উদ্দিন নামে এক ঠিকাদারের ১১ কোটি ২৬ লাখ ৯৯ হাজার ৯২২ টাকার উন্নয়ন কাজ আটকে আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রকৌশলী বলছেন ঠিকাদার রিয়াজ উদ্দিনের সকল কাজের জন্য তদারকি কর্মকর্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও তিনি কাজ শুরু করছেন না।

উপজেলা প্রকৌশল অফিস, ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রকৌশলী মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে সম্প্রতি রিয়াজ উদ্দিনসহ ১৫ জন ঠিকাদার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এরইপ্রেক্ষিতে অভিযোগকারী ঠিকাদারদের মধ্যে রিয়াজ উদ্দিনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গত ৮ ডিসেম্বর কেন্দুয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক। এসব ঘটনায় সম্প্রতি প্রকৌশলী মোজাম্মেল হককে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বদলিও করেন। কিন্তু বদলি আদেশের পরপরই অজ্ঞাত কারণে ওই বদলি স্থগিতও করা হয়।

ঠিকাদার রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমি ৫ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ, ৮২ লাখ ১০ হাজার ৩০৫ টাকা ব্যয়ে পাহাড়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ, ৮৩ লাখ ১ হাজার ৬১৭ টাকা ব্যয়ে সিংহেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ, ২ কোটি ৪২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণজাত-চৌমুরিয়া রাস্তা নির্মাণ, ৮৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ব্যয়ে চিরাং ইউনিয়ন অফিস কেন্দুয়া-আঠারবাড়ী রাস্তা ভায়া ছিলিমপুর রাস্তা নির্মাণ ও ৮৩ লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে নোয়াদিয়া হাসুয়ারী ফেরীঘাট ভায়া আশুজিয়া ইউপি অফিস পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ কাজ পেয়েছি। এরমধ্যে স্থানীয় এমপি মহোদয় উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেছেন এবং কাজ শুরুর লক্ষে প্রয়োজনীয় মালামালও মজুদ রয়েছে। অচিরেই কাজটি শুরু করব। ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজের মধ্যে পাহাড়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাজ চলমান রয়েছে এবং সিংহেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের স্থানে গাছ থাকায় সে গাছটি না সরানোয় কাজটি শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া ৩টি রাস্তা নির্মাণ কাজের তদারকি কর্মকর্তাসহ সাইট বুঝিয়ে না দেওয়ায় এখনও কাজ শুরু করতে পারিনি। কাজ শুরুর জন্য প্রকৌশলীর কাছে গত ১৮ ডিসেম্বর লিখিত আবেদন করলেও তিনি তদারকি কর্মকর্তা ও সাইট বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। এ অবস্থায় কাজের জন্য ক্রয়কৃত লাখ লাখ টাকার সামগ্রী পড়ে রয়েছে।

প্রকৌশলী জিডি করার পর থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রকৌশল অফিসে স্বশরীরে যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছেন জানিয়ে ঠিকাদার রিয়াজ উদ্দিন বলেন, অফিসে গেলে তারা মিথ্যা ঘটনা ঘটিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। তাই আমি নিজে অফিসে না গিয়ে আমার নিজস্ব লোক মারফত অফিসিয়াল কার্যক্রম চালিয়ে আসছি।

এ বিষয়ে কথা হলে প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত ভবনের লে-আউটসহ কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুটি স্কুলের কাজের লে-আউটও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও ঠিকাদার রিয়াজ উদ্দিন কাজ করছেন না। এছাড়া রিয়াজ উদ্দিনের আবেদনটি মার্ক করে দিয়ে তিনটি রাস্তার কাজের জন্য তদারকি কর্মকর্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার কাজ শুরু নিয়ে গড়িমসি করছেন। আমরা চাই তিনি দ্রুত কাজগুলো শুরু করুক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির অন্যান্য খবর