কেন্দুয়া ( নেত্রকোনা)সংবাদদাতা
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় এক কিশোরীর ছবি দিয়ে টিকটক তৈরি করে বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে মানহানির ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ওই কিশোরীর মা রাবেয়া আক্তার বাদী হয়ে গত (৪ মার্চ) একই এলাকার আয়াতুল (২২) সহ ৪ জনকে আসামী করে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের বরাতে জানা গেছে, উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের বানিয়াগাতী গ্রামের রবি মিয়ার কিশোরী কন্যা রুকসানা আক্তার (১৬) কে একই গ্রামের হেকিম মিয়ার ছেলে আয়াতুল মিয়া (২২) দীর্ঘদিন ধরে কুপ্রস্তাব দেওয়াসহ নানাভাবে উত্যক্ত করে আসছিল। বিষয়টি আয়াতুলের পরিবারকে জানালে তারা তা আমলে নেয়নি। বরং আয়াতুল আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় স্বামীকে বাড়িতে রেখে সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় চলে যান রুকসানার মা। সেখানে রুকসানা ও তার ভাই হুমায়ূন গামেন্টর্সে এবং তাদের মা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ শুরু করেন।
এদিকে আয়াতুল তার লোকজনের মাধ্যমে রুকসানার ছবি সংগ্রহ করে সেগুলো নিজের ছবির সাথে লাগিয়ে টিকটক তৈরি করে তা মোবাইলে বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এক পর্যায়ে ওই টিকটক রুকসানার আত্মীয় স্বজনদের দৃষ্টিগোচর হলে তারা বিষয়টি রুকসানার মাকে জানায়। পরে রুকসানার মা রাবিয়া আক্তার ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ছুটে গিয়ে আয়াতুল মিয়ার পরিবারকে টিকটকের বিষয়টি জানান। পরে তাদের বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে আয়াতুল তার লোকজন নিয়ে রাবেয়া আক্তারের পথ আটকিয়ে গালিগালাজের এক পর্যায়ে তাকে মারধর করে আহত করে। এ সময় স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে রাবেয়াকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
রুকসানার মা রাবেয়া আক্তার বলেন, আমরা গরীব ও অসহায় মানুষ। তাই তারা আমার কিশোরী মেয়েটার মানসম্মান নিয়ে যা খুশি তাই করছে। পরিবারের কাছে বার বার নালিশ করেও কোনো ফল হয়নি। আমার মেয়েটা যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ত তখন থেকে উত্যক্ত করে আসছে আয়াতুল। তার অত্যাচারে মেয়েটাকে লেখাপড়া করাতে পারিনি। শেষে ঢাকায় নিয়ে গামেন্টর্সে ভর্তি করি। কিন্তু সেখানে গিয়েও আয়াতুলের কাছে থেকে রেহাই হল না। সে আমার মেয়ের ছবি দিয়ে টিকটক বানিয়ে মেয়েটার মানসম্মান নষ্ট করেছে। আমি এর উচিত বিচার চাই।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আয়াতুল মিয়ার পরিবারের লোকজন।
আয়াতুলের ভগ্নিপতি আক্কাস মিয়া বলেন, রুকসানাকে আয়াতুলের কাছে বিয়ে দেওয়ার জন্য তার পরিবার উঠেপড়ে লেগেছে। তাই তারা নিজেরাই এসব করে প্রচার দিচ্ছে।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী হোসেন বলেন, অভিযোগটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।