বিশেষ প্রতিবেদকঃ জামালপুর, দিনাজপুর জে’লা প্রশাসনের (ডিসি) নারী কেলেঙ্কারীর পর এবার ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা জে’লা প্রশাসক (ডিসি) মউনউল ইসলামের বি’রুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর অ’ভিযোগ তুলেছেন তারই সহকর্মী সাবেক এডিসি শাকিলা দিল। তিনি অ’ভিযোগ করেন , নেত্রকোনা জে’লা প্রশাসক (ডিসি) মউনউল ইসলাম বিভিন্নভাবে নিজের ভালোলাগা-ভালোবাসার কথা প্রকাশ করতে গিয়ে একপর্যায়ে সহকর্মীর (নারী কর্মকর্তা) জীবন অ’তিষ্ঠ করে ফে’লেছেন।
শেষমেশ ডিসি মউনউল ইসলামের বিচার দাবি করে জনপ্রশাসন স’চিবের কাছে লিখিত অ’ভিযোগ দিয়েছেন ভু’ক্তভোগী নারী কর্মকর্তা।
নেত্রকোনা ডিসির বি’রুদ্ধে গত ৪ মার্চ জনপ্রশাসন ম’ন্ত্রণালয়ের স’চিবকে লেখা আবেদনপত্রের এক স্থানে উপস’চিব পদমর্যাদার ওই নারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন,বিভিন্ন সময়ে প্রেম নিবেদন করেন এবং নিজের ক’ষ্টকর দাম্পত্যজীবনের জন্য সহানুভূতি প্রার্থনা করেন তিনি। অনলাইনে, প্রকাশ্যে, জনসম্মুখে একাধিকবার আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফে’লেন। ওনাকে সতর্ক করা সত্ত্বেও উনি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে ব্যক্তিগত শালীনতাবোধ অতিক্রম করেন। দায়িত্বশীল আচরণ করতে বলা হলে উনি ক্ষমতার অ’পব্যবহারেপূর্বক নিুস্বাক্ষরকারীকে অন্যায় এবং মি’থ্যা শো’কজ করেন এবং হু’মকি-ধমকি দেয়ায় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি পারিবারিক সহিং’সতার শি’কার হই। অবমাননাকর পরিস্থিতিতে আমার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। তার (ডিসি) অ’মানবিক এবং অসামাজিক আচরণের কারণে আমার জীবন বি’পর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এঘটনায় ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অ’ভিযোগ দেন এডিসি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভু’ক্তভোগী নারী কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে লেখাপড়া করেছি। ইংল্যান্ডেও পড়াশোনা করেছি। আমারও একটা প্রিভিয়াস বেটার ক্যারিয়ার আছে। কিন্তু একবার ভাবুন, আমার জীবন কতটা অ’তিষ্ঠ হয়ে উঠলে আমি প্রায় দু’বছর পর লিখিত অ’ভিযোগ দিতে বা’ধ্য হয়েছি।’ তিনি বলেন, ২০১৮ সালের জুলাই মাস থেকে আমাকে নানাভাবে ডিস্টার্ভ করা শুরু করেন। সিনিয়র অফিসার হওয়ার কারণে প্রথমদিকে কৌশলে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু উনি তো আমার ডিসি। সরাসরি নিয়ন্ত্রণকারী সিনিয়র অফিসার। যখন-তখন ডেকে পাঠাতেন। কাজ না থাকলেও একরকম ওনার অফিসকক্ষে আমাকে বসিয়ে রেখে কথা বলতে চাইতেন। সব বলতে চাই না। বহুবার তাকে শৃঙ্খলা ও শালীনতাবোধ অতিক্রম করতে নিষেধ করেছি। কিন্তু তিনি শুনতেন না। বদলি হতেও চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার কারণে বদলি হতে পারিনি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাফ জানিয়ে দিতেন, আমি খুব ভালো অফিসার। জে’লার শিক্ষার মানোন্নয়নে আমাকে খুব বেশি প্রয়োজন। বদলি করা যাবে না।
কিন্তু যখন দেখলাম, তার কারণে আমার সংসার টেকানোই কঠিন হয়ে পড়েছে, তখন বা’ধ্য হয়ে বিভাগীয় কমিশনারসহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কয়েকজন সিনিয়র অফিসারের কাছে মৌখিক অ’ভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি; বরং সেটি জানার পর তিনি আমাকে শো’কজ করে মা’নসিকভাবে আরও বি’পর্যস্ত করে ফে’লেন।’ভু’ক্তভোগী কর্মকর্তা আরও বলেন. ‘তার কারণে শেষ পর্যন্ত আমার সংসার ভে’ঙে গেল। চ’রম বিপর্যয় মাথায় নিয়ে বদলি হয়ে গত বছর জানুয়ারি মাসে স’ন্তানসহ ঢাকায় চলে আসি। ৭-৮ মাস তো ভীষণ ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছি।
এখনও সারাক্ষণ আমি বি’ষময় জীবন পার করছি। ঢাকায় এসে গত এক বছর স’ন্তান নিয়ে সীমাহীন ক’ষ্ট করেছি, যা জীবনে কোনোদিন করিনি। এর মধ্যে আমি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগও হাতছাড়া করে ফে’লেছি। শুধু ওনার কারণেই। সবই হা’রিয়ে ফে’লেছি। সুন্দর, সাজানো-গোছানো সংসার সব শেষ। এখন স’ন্তান আর চাকরিটা নিয়ে আছি। সিনিয়র স্যাররা নিশ্চয়ই সবদিক বিচার-বিশ্লেষণ করে আমার প্রতি ন্যায়বিচার করবেন। যাতে ভবি’ষ্যতে কোনো নারী কর্মকর্তাকে আমার মতো এভাবে নি’র্যাতিত ও ক্ষ’তিগ্রস্ত হতে না হয়।’
গত ৪ মার্চ ডিসির বি’রুদ্ধে জনপ্রশাসন ম’ন্ত্রণালয়ের স’চিবকে লেখা আবেদনপত্রের এক স্থানে উপস’চিব পদমর্যাদার ওই নারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, তার (ডিসি) অ’মানবিক এবং অসামাজিক আচরণের কারণে আমার জীবন বি’পর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপপ্রাপ্ত হয়েও উচ্চশিক্ষা গ্রহণে অপরাগ হই। অপরদিকে গত ১৫ মার্চ ডিসি অ’ভিযোগকারী নারী কর্মকর্তার বি’রুদ্ধেও পাল্টা অ’ভিযোগ এনে মন্ত্রিপরিষদ স’চিব বরাবর লিখিত দেন।
এ বি’ষয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) নিরঞ্জন দেবনাথ বলেন, বি’ষয়টি ত’দন্ত পর্যায়ে আছে। এ মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। ভি’কটিম সাক্ষী হিসেবে ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম-পরিচয় উল্লেখ করেছেন। ক’রোনার কারণে তাদের সাক্ষ্য নিতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। এ সপ্তাহের মধ্যে তাদের বক্তব্য নেয়া হবে।এ বি’ষয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) নিরঞ্জন দেবনাথ বলেন, ‘বি’ষয়টি ত’দন্ত পর্যায়ে আছে। এ মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। ভি’কটিম সাক্ষী হিসেবে ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম-পরিচয় উল্লেখ করেছেন। ক’রোনার কারণে তাদের সাক্ষ্য নিতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। এ সপ্তাহের মধ্যে তাদের বক্তব্য নেয়া হবে।